অংশগ্রহণমূলক কাজ ৬৩

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা - বৌদ্ধধর্মে পরমতসহিষ্ণুতা | NCTB BOOK

অন্যেরা যখন মতামত দেয়, তখন আমাদের কী করা উচিত?

ক) কথা বলা; 

খ) জোরে আওয়াজ করা; 

গ) ধৈর্যসহকারে শোনা; 

ঘ) নিজের খুশিমতো কাজ করা।

 

 

পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজনীয়তা

 

তথাগত বুদ্ধের সমকালীন ভারতবর্ষে প্রায় বাষট্টি প্রকার ধর্মমতের প্রচলন ছিল। বিভিন্ন মুনি-ঋষির নিজস্ব সাধনা ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে এই ধর্মমতগুলোর উদ্ভব। সেই ধর্মমত প্রবর্তনকারী অনেক মুনি-ঋষির সঙ্গে বুদ্ধের যোগাযোগ ছিল। তাঁদের মধ্যে জীবন ও জগতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনাও হতো। এই আলোচনার লক্ষ্য ছিল পরস্পরকে বোঝা। অন্যের মতাদর্শকে উপলব্ধি করা। বুদ্ধ অপর কোনো ধর্মীয় মত ও পথকে কেন্দ্র করে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি বরং তাঁর নিজের ধর্ম-দর্শন সম্পর্কে বলেছেন, 'এসো, দেখো, উপলব্ধি করো, স্বীয় জ্ঞানে বিশ্লেষণ করো, প্রয়োজন মনে হলে গ্রহণ করো।' তিনি বলেছেন, কোনো অদৃশ্য শক্তির প্রতি নিজেকে সমর্পণ নয়, আপন কর্মের মাধ্যমে আত্মশক্তিতে বলীয়ান হতে; প্রত্যেকের নিজ নিজ অন্তর চৈতন্যে জ্ঞানের আলোয় প্রদীপ্ত করতে। যার মাধ্যমে মানুষ কর্মে ও চিন্তায় সত্য, সুন্দর ও নিষ্ঠাবান হয়। অর্থাৎ, কে কোন ধর্মমতের অনুসারী সেটি বড় কথা নয়, নিজের চেতনা ও কর্মকে আদর্শবান ও নৈতিকতাসম্পন্ন করা একান্ত আবশ্যক। এভাবে তিনি সব মতাদর্শের সঙ্গে তাঁর চিন্তার সমন্বয় করতেন। সে কারণে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁর ধর্মাদর্শে স্থান পেয়েছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসা ছাড়া সর্বজনীন সম্প্রীতি গড়ে ওঠে না। আবার এই বোধ ছাড়া পরিবার, সমাজ এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও শান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টি হয় না। তাই মানুষের জীবনে পরমতমহিষ্ণুতার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বলা যায় মানুষের জীবনে পরিবার ও সমাজে পারস্পরিক সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য পরমতসহিষ্ণুতার প্রয়োজন অপরিসীম।

 

Content added || updated By
Promotion